মনোয়ার হোসেন, চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি।।
সাংবাদিকতার মাধ্যমে বাংলাদেশের অভিবাসন খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় সংবাদপত্র আঞ্চলিক ক্যাটাগরিতে ‘মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের তরুণ সাংবাদিক ও কলামিস্ট মোঃ এমদাদ উল্যাহ। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে ক্রেষ্ট, সনদপত্র ও প্রাইজ মানির চেক তুলে দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের হেড অব কো-অপারেশন মাউরিজিও কিয়ান, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম বাংলাদেশ) এর চিফ অব মিশন গিওরগি গিগাওরি ও ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, সিনিয়র ডিরেক্টর কেএমএম মোর্শেদ, মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল ইসলাম হাসান।
মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তরা অন্যরা হলেন; সংবাদপত্র জাতীয় ক্যাটাগরিতে ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ-এর ওয়াসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, দৈনিক প্রথম আলোর মোঃ মহিউদ্দিন এবং দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের আরাফাত আরা। সংবাদপত্র আঞ্চলিক ক্যাটাগরিতে সিলেটের দৈনিক জালালাবাদের আবু তাহের মো. তুরাব ও দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের ফারুক মুনির। টেলিভিশন বিভাগে ডিবিসি টেলিভিশনের সাবিনা ইয়াসমিন, যমুনা টিভির সালাউদ্দিন আহমেদ এবং নিউজ২৪ টিভির আশিকুর রহমান শ্রাবণ। রেডিও বিভাগে একমাত্র বিজয়ী বাংলাদেশ বেতারের মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। অনলাইন সংবাদপত্র বিভাগে প্রথম আলো অনলাইনের মানসুরা হোসাইন, তুরস্ক-ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আনাদুল এজেন্সির ফ্রিল্যান্স রিপোর্টার কামরুজ্জামান বাবলু এবং বাংলা ট্রিবিউনের সাদ্দিফ অভি। সাংবাদিকদের পাশাপাশি অভিবাসন খাতে অবদান রাখা সংবাদমাধ্যমকে স্বীকৃতি দিতে এ বছর সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠান বিভাগে পুরস্কার চালু করা হয়। সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠান বিভাগে একমাত্র পুরস্কারটি পেয়েছে অনলাইন সংবাদমাধ্যম প্রবাস কথা।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘অভিবাসন খাতে গঠনমূলক কাজ করার জন্য মিডিয়াসহ সবারই একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন। সচেতনতা তৈরিতে মিডিয়া ব্যাপক ভূমিকা রাখে।’
ব্র্যাক জানায়, ‘অভিবাসন খাতে সাংবাদিকতাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ২০১৫ সাল থেকে ব্র্যাক এ পুরস্কারটি প্রবর্তন করে। এ বছরের ‘মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ আইওএম বাংলাদেশ এবং ব্র্যাক অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ‘প্রত্যাশা প্রকল্প’ থেকে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় ব্র্যাক। এই প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বে এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।
চলতি বছরের জানুয়ারির ১০ তারিখে পত্রিকায় এবং ব্র্যাকের ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ/প্রতিবেদন আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকতার শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি জুরিবোর্ড এসব প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে সংবাদপত্র (জাতীয়), সংবাদপত্র (স্থানীয়), টেলিভিশন সংবাদ, রেডিও, অনলাইন সংবাদপত্র এবং সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠান— এই ছয়টি ক্যাটাগরিতে ১৩ জন সাংবাদিক এবং একটি সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচিত করে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর (অ্যাডভোকেসি, ইনোভেশন অ্যান্ড কোঅপারেশন) কেএএম মোর্শেদ।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, ‘আমরা অভিবাসন ক্ষেত্রে সুশাসনকে নিশ্চিত করতে পারি, যদি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো একসঙ্গে কাজ করে। গণমাধ্যম আমাদের অংশীজনদের মধ্যে অন্যতম, যারা আমাদেরকে অভিবাসন ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনাগুলোকে শনাক্ত করতে সহযোগিতা করে থাকে। আমি বিশ্বাস করি, প্রত্যাশা প্রকল্পের আওতাধীন মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের মতো পদক্ষেপগুলো নিয়মতান্ত্রিক, নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসনে সরকারের প্রচেষ্টাগুলোকে আরও সমৃদ্ধ করবে’।
ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল ইসলাম হাসান মূল বক্তব্য উপস্থাপনের সময় অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকার বিষয়ে আলোকপাত করেন।
মাইগ্রেশন মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত সাংবাদিক মোঃ এমদাদ উল্যাহ এর আগে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর সাহিত্যিক, রাজনীতিবীদ ও সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার পুরুস্কারসহ বিভিন্ন পুরুস্কার অর্জন করেছেন। তিনি ২০০৫ সাল থেকে সৎ ও সাহসিকতার সাথে সাংবাদিকতার সাথে জড়িত রয়েছেন। সাংবাদিক এমদাদ উল্যাহ ১৯৮৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের সাতঘড়িয়া গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আবদুর রহমান। বর্তমানে তিনি সাপ্তাহিক চৌদ্দগ্রাম পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক, জাতীয় ও আঞ্চলিক বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। মাইগ্রেশন মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড অর্জন করায় সাংবাদিক মোঃ এমদাদ উল্যাহকে অভিনন্দন জানিয়েছে সাংবাদিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page